ক্রীড়া প্রতিবেদক

নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা সাকিবের জন্য প্রথম চ্যালেঞ্জ হলো ফিটনেস ফিরে পাওয়া। এক বছর খেলা থেকে দূরে ছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই একটা অনভ্যস্ততা তৈরি হবেই। সোমবার তার ফিটনেস পরীক্ষা নেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।এ বিষয়টি নিয়ে অবশ্য সাকিব খুব একটা চিন্তিত নন। কারণ মাসখানেক আগে বিকেএসপিতে নিবিড় অনুশীলনের সময় এই বিষয় নিয়েই কাজ করেছেন তিনি। আগামী এক বছর অনেক খেলা। সে চ্যালেঞ্জ নিতে তৈরি হওয়ার জন্যই বিকেএসপিতে প্রস্তুতি নিয়েছেন সাকিব।ফিটনেস ফিরে পাওয়ার সঙ্গে সাকিবের আরেকটি প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ হবে জাতীয় দলের ড্রেসিংরুমে মানিয়ে নেওয়া। জুয়াড়ির সঙ্গে যোগাযোগের কথা গোপন করার দায়ে আইসিসির শাস্তি পাওয়া একজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে সতীর্থরা কি আগের মতো মন খুলে মিশবেন? সব বিষয়ে তার ওপর আগের মতো নির্ভর করবে? জাতীয় দলের প্রায় সবার সঙ্গে দারুণ সম্পর্কের কারণে হয়তো এ ব্যাপারে খুব একটা সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে না তাকে। তবে ফিটনেস ফিরে পাওয়া এবং ব্যাটে-বলে আগের মতো দাপুটে পারফর্ম করাটা তার জন্য একটা চ্যালেঞ্জ।
উদাহরণ হিসেবে মোহাম্মদ আশরাফুলের কথা বলা যায়। তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা থেকে ফেরার পর আশরাফুলের ফিটনেস সেই আগের মতো ছিল না, তার ব্যাটের ধারও কমে গিয়েছিল। অবশ্য সাকিবের বেলায় সে ঝুঁকিটা কম। তিন বছর একটা লম্বা সময়। আর সাকিবের এক বছরের নিষেধাজ্ঞার সময়ে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে খেলাও তেমন হয়নি। খুব বেশি খেলা মিস করেননি বলে মানসিকভাবেও একটু ভালো অবস্থায় থাকবেন সাকিব।প্রত্যাবর্তনের পর সাকিব প্রথম মাঠে নামবেন বিসিবি আয়োজিত টি২০ টুর্নামেন্টে। নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে শুরু হতে যাওয়া এই টুর্নামেন্ট খেলতে মুখিয়ে আছেন সাকিব। এই টুর্নামেন্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার প্রস্তুতিটা নিতে চান তিনি। ইউটিউবে চ্যানেলে প্রশ্নোত্তর পর্বে সে কথা তিনি বলেছেনও, 'বিকেএসপির অনুশীলন খুব ভালো ছিল। ওই ট্রেনিং আমার খুব দরকার ছিল। যদিও আমার ইচ্ছা ছিল আরও ১৫-২০ দিন অনুশীলন করার। যেহেতু শ্রীলঙ্কা সফর হয়নি, তাই ওটা আর চালিয়ে যাওয়া হয়নি। আরও ১৫-২০ দিন সেটা চালাতে পারলে আগামী এক-দুই বছরের জন্য আমার প্রস্তুতি হয়ে যেত। যেহেতু হাতে সময় আছে, সামনে ঘরোয়া একটি টুর্নামেন্ট আছে, ওই ১৫-২০ দিনের যে গ্যাপ ছিল সেটা আমি পূরণ করে ফেলতে পারব।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিবের ফেরার সুযোগ আসবে আগামী জানুয়ারিতে। তিনটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টি২০ খেলতে আগামী বছরের শুরুতে বাংলাদেশে আসবে উইন্ডিজ। এ সিরিজ শেষে তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি২০ খেলতে নিউজিল্যান্ড যাবে টাইগাররা। জুনে দুই টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও তিন টি২০ খেলতে জিম্বাবুয়ে সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশের। সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ড বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে। আগামী বছর বাংলাদেশের অনেক খেলা।
জাতীয় দলের হয়ে এসব ম্যাচে খেলা সাকিবের জন্য মোটেও চ্যালেঞ্জিং হবে না। হয়তো আগের মতো পারফর্মও করবেন। তবে বিশ্বব্যাপী তার যে বাজার ছিল, সেটা কি আগের মতো থাকবে? ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে আগের মতো তার চাহিদা থাকবে? তাকে আগের মতো তারা বিশ্বাস করবে? আইসিসির নিষেধাজ্ঞা মানেই তো ক্যারিয়ারে একটা লাল কালির দাগ। সাধারণত ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো এমন খেলোয়াড়কে এড়িয়ে চলতে চায়। তাদের আস্থা অর্জন করাটাও সাকিবের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
0 Comments